অনলাইন ডেস্ক :
চলমান ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপে বিতর্কিত একাধিক প্রার্থী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। এ কারণে মনোনয়নবঞ্চিত ত্যাগী নেতারা ক্ষুব্ধ হয়ে একের পর এক অভিযোগ দিতে শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ দপ্তরে। অভিযোগের সংখ্যা বেশি হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারাও। তাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগামী ধাপগুলোতে দলীয় প্রতীকে মনোনয়নের পরিবর্তে প্রার্থিতা উন্মুক্ত রাখার বিষয়ে ভাবছে আওয়ামী লীগ।
তবে গতকাল বিকালে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডে। তবে এর মধ্যেই তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর এবং গোপালগঞ্জ (একাংশ) জেলার ৮৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থিতা উন্মুক্ত করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘নানা কম্পোজিশন আছে। তবে সিদ্ধান্ত না হওয়ার আগে কিছু বলা যাবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘অনেক জায়গায়ই এ ধরনের আলাপ-আলোচনা করছে এখন পর্যন্ত কিছু চূড়ান্ত হয়নি’।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলার সংসদ সদস্যরা নিজের এলাকার ইউপি নির্বাচনে উন্মুক্ত করার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড বরাবর আবেদন করেন। সংসদ সদস্যরা হলেন মাদারীপুর-১ আসনের নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন, মাদারীপুর-২ আসনের শাজাহান খান, মাদারীপুর-৩ আসনের ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, শরীয়তপুর-১ আসনের ইকবাল হোসেন অপু, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও শরীয়তপুর-২ আসনের এ কে এম এনামুল হক শামীম ও শরীয়তপুর-৩ আসনের নাহিম রাজ্জাক। এই সংসদ সদস্যদের আবেদনের ফলে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর এবং গোপালগঞ্জ (একাংশ) জেলার ইউনিয়নগুলোতে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকছে। দলের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, দলটির মনোনয়নের তালিকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী, রাজাকারপুত্র, শিবির নেতা, বিএনপি থেকে আসা অনেককে মনোনয়ন পেয়েছেন। এর ফলে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে অনেকেই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে বিদ্রোহীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৯০ জন। এসব বিদ্রোহীর অনেকেই ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তৃতীয় ধাপেও সে সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারেন বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। নৌকার প্রার্থী আর দলেরই বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে হচ্ছে প্রচার-প্রচারণার লড়াই। নির্বাচনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য নৌকা প্রতীক চান না তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
প্রার্থী উন্মুক্ত রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে দলের নীতিনির্ধারক, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য জানিয়েছেন, ‘যে হারে বিতর্কিতরা দলে ঢুকে পড়েছেন তা দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা মেনে নিবে না। এক্ষেত্রে জেলা-উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এর দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না। তাদের পাঠানো নাম থেকে বোর্ডে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে যে ইউনিয়নে বিতর্কিতরা মনোনয়ন পেয়েছে সেখানে দলের অনেকেই স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন। আগামীতে এ বিষয়গুলো কীভাবে একটা নিয়মের মধ্যে আনা যায় সেসব বিষয়ে দল ভাবছে।’ তিনি আরো জানান, ‘প্রার্থী উন্মুক্ত রাখা হলে তৃণমূলে সবাই প্রার্থী হতে চাইবে। তখন আবার দলীয় শৃঙ্খলার বিষয়টিও ভাবতে হয়। তাই সব কিছু নিয়ে আলোচনা করতে হচ্ছে।’
প্রতিদিনের সংবাদ